শিমুল মূল এর গুনাগুন - শিমুল মূল খাওয়ার যত উপকারিতা
কনটেন্ট সূচিপত্র: শিমুল মূল এর গুনাগুন ও শিমুল মূল খাওয়ার যত উপকারিতা
- শিমুল মুল কি- ভূমিকা
- শিমুল মূল এর গুনাগুন
- শিমুল মূল খাওয়ার যত উপকারিতা
- খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা
- কাঁচা শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা
- শিমুল মূলের পাউডার তৈরির নিয়ম
- শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার নিয়ম
- শেষ কথাঃ শিমুল মূল এর গুনাগুন ও শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
শিমুল মুল কি- ভূমিকা
শিমুল গাছ সৌন্দর্য বৃদ্ধিকারক বৃক্ষ হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত। শিমুল গাছের
বাকল , শিমুল মূল, শিমুলের ফুল, শিমুলের পাতা প্রাচীনকাল থেকেই ভেষজ ওষুধ হিসেবে
ব্যবহার হয়ে আসছে। গবেষকেরা শিমুল মূলকে প্রাকৃতিক ভায়াগ্রা হিসেবে আখ্যায়িত
করেছেন । বিভিন্ন ধরনের রোগের মহা ঔষধ হিসেবে শিমুল মূল পরিচিত। শিমুল গাছ বেশ
লম্বা হয় এবং এর ফুল দেখতে খুব সুন্দর লাগে। বসন্তকালে গাছে গাছে শিমুল ফুলে ভরে
যায়।
শিমুল মূল এর গুনাগুন
প্রিয় বন্ধুরা এখন আমরা জানবো শ্যামল মোলের গুনাগুন সম্পর্কে। শিমুল মুলার গুনাগুন বলে শেষ করার নয়। প্রাচীনকাল থেকে শিমুল মূল বিভিন্ন রোগের কার্যকরী ওষুধ হিসেবে ব্যবহারিত হয় বর্তমানকালেও তার ব্যতিক্রম নেই।বর্তমান সময়ে বিশেষ করে পুরুষের যৌন সমস্যার যেকোনো সমাধানে শিমুলের মূল ব্যবহার করা হয়।
যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে , পুরুষের শুক্রানুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে , যৌন ক্ষমতা ও সময়
বৃদ্ধিতে , পুরুষের অকাল বিচ্ছুপাত প্রতিরোধ করতে এছাড়াও মহিলাদের মাসিকের
প্রদাহ ও অতিরিক্ত ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণ , ডায়াবেটিস প্রতিরোধে , অপুষ্টে
জনিত সমস্যা সমাধানে , যে কোন ক্ষত নিরাময়ে , শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে শরীরকে
শক্তিশালী করতে শিমুল মূল ব্যবহার করা হয়। শিমুল এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
স্টার্চ প্রায় ৭১.২%। পরীক্ষা করে দেখা গেছে , প্রায় ১০০ গ্রাম শিমুল মূলে
রয়েছে-
- স্টার্চ প্রায় ৭১.২%
- আদ্রতা ৭.৫%
- চিনি 8.2%
- প্রোটিন1.2%
- চর্বি রয়েছে 0.9%
- খনিজ পদার্থ ২.৫%
- টেনিন 0.9%
- Cellulos 2 পার্সেন্ট
- ক্যালসিয়াম ৯৩ মিলিগ্রাম
প্রিয় বন্ধুরা আশা করি আপনারা বুঝতে পেরেছেন শিমুল মূলের গুনাগুন সম্পর্কে
শিমুল মূল খাওয়ার যত উপকারিতা
বন্ধুরা চলুন আমরা জেনে নেই- শিমুল মূল খাওয়ার যত উপকারিতা
- আয়ুর্বেদিক শাস্ত্রমতে দুর্বলতা দূর করে যৌন শক্তিবর্ধক বীর্য সৃষ্টি কারক শিমুল মূল অত্যন্ত উপকারী
- যৌন শক্তি বৃদ্ধিতে শিমুল মূল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে
- পুরুষের বীর্যকে ঘন করে
- বীর্যে শুক্রানুর সংখ্যা কয়েক গুণ বৃদ্ধি করে
- যৌন স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে
- পুরুষের অকালে বীর্যপাত সমস্যা সমাধানে ভূমিকা রাখে
- শিমুল মূল পুরুষের ইরেক্ট টাইল ফাংশন চিকিৎসার জন্য অত্যন্ত উপকারী
- শক্তিশালী করতে শিমুল মূল এর উপকারিতা অনেক বেশি কার্যকরী
- মস্তিষ্কে অবস্থিত লিবিডোকে উজ্জীবিত করে। যৌন চাহিদা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে
- মহিলাদের মাসিকের সমস্যার সমাধানে এবং শ্বেত প্রদাহ ও অতিরিক্ত ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে
- পুরুষের শুক্র তারল্য রোধ করে
- শিমুল মূল পাতলা পায়খানা ও রক্ত আমাশয় কার্যকরী
- শরীরের রক্ত পরিশোধনে সাহায্য করে
- ফোড়া রোগের চিকিৎসায় শিমুল মূল ব্যবহার করা হয়
- মেস্তা ও উদাহরণ রোগের চিকিৎসায় ও শিমুল মূল অত্যন্ত উপকারী ভূমিকা পালন করে
- রক্ত আমাশয়ে শিমুল মুলের পাউডার ছাগলের দুধের সাথে মিক্স করে দিনে দুই বেলা খেলে ভালো ফল পাওয়া যায়।
- পেটের যেকোনো সমস্যার সমাধানে
- সর্দি কাশির ভালো ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়
- ত্বকে ব্রণের সমস্যার সমাধানে এবং যেকোনো দাগ দূর করতে সাহায্য করে
- এই শিমুল মূল দাঁতের মাড়ি শক্ত করে ও মহিলাদের স্রেত প্রদাহ ও অতিরিক্ত ঋতুস্রাবে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় বন্ধুরা এখন আমরা জানবো খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। প্রথমত আমরা জেনে নেই শিমুল গাছের কোন কোন অংশ খাওয়া যায়। শিমুল গাছের মূল , বা কল , কষা ,বীজ ও ফুল ইত্যাদি খাওয়া যায়। খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা গুলো জেনে নিন-
- যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়া অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ
- স্নায়বিক দুর্বলতা দূর করতে সাহায্য করে
- মহিলাদের সেতো প্রদাহ ও অতিরিক্ত ঋতুস্রাব নিয়ন্ত্রণে আনতে সাহায্য করে
- দাঁতের মাড়ি শক্ত ও মজবুত করতে সাহায্য করে
- যে কোন ক্ষত নিরাময় সাহায্য করে
- ডায়রিয়া ও আমোশয় রোগীদের খালি পেটে শিমুল মূল খাওয়ালে উপকার বয়ে নিয়ে আসে
- খালি পেটে শিমুল মূল সেবন করলে রক্ত আমাশয় রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়
- যে ব্যক্তি নিয়মিত খালিপেটে শিমুল মূল সেবন করবে তার বার্ধক্য পর্যন্ত যৌবন ফুরাবে না। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি বুঝতে পেরেছেন খালি পেটে শিমুল মূল খাবার উপকারিতা সম্পর্কে।
কাঁচা শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা
প্রিয় বন্ধুরা এখন আমরা জানবো কাঁচা শিমুল বুল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে। কাঁচা শিমুল মূলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ , ভিটামিন সি , ফলিক এসিড , এন্টিঅক্সিডেন্ট ও বিটা ক্যারোটিন যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী এবং আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে , শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করতে , পুরুষাঙ্গ শক্ত করতে , বীর্যের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেটের হজম শক্তিকে বৃদ্ধি করে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে , ত্বক ও চুলের সমস্যার সমাধান করে। যাদের
ত্বকের সমস্যা রয়েছে অর্থাৎ তাকে ব্রণ হয় , খোশ পাঁচড়া , এবং ত্বকে বয়সের ছাপ
, চোখের নিচে কালো স্বার্কেল তাদের সমস্যা সমাধানে কাঁচা সেমন মূল সেবন করবেন এবং
আক্রান্ত স্থানে পেস্ট তৈরি করে লাগাবেন এতে অতি শীঘ্রই উপকার পাবেন। এছাড়াও
শিমুল মূলে থাকা জৈবিক উপাদান গুলো স্কিন কেয়ারের পাশাপাশি হেয়ার কেয়ারেও
ভূমিকা পালন করে। তো প্রিয় বন্ধুরা আশা করি বুঝতে পেরেছেন কাঁচা শিমুল মূল
খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে।
শিমুল মূলের পাউডার তৈরির নিয়ম
প্রিয় বন্ধুরা এখন আমরা জানবো শিমুল মূলের পাউডার তৈরীর নিয়ম সম্পর্কে তো চলুন জেনে নিন। প্রথমে আপনাকে বাজার থেকে শিমুল মূল সংগ্রহ করতে হবে। এরপর শিমুল মূল গুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে যেন প্রাকৃতিক হলো বালি ও ময়লা আবর্জনা লেগে না থাকে।
ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়ে গেলে ছোট ছোট করে কেটে নিতে হবে এরপর রোদ্রে ভালোভাবে শুকিয়ে নিতে হবে। ভালোভাবে শুকানো হয়ে গেলে এই ছোট ছোট চূর্ণ গুলো করে নিতে হবে। আপনার হাতের কাছে ব্লেন্ডার থাকে তাহলে সেখানে গুড়া করে নেবেন আর না হলে শিল গুড়োতে বেটে ফাকি তৈরি করে নিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ
এরপর এগুলো চালুনের সাহায্যে চেলে নিতে হবে। এরপর এই ফাঁকিগুলো কাঁচের জারে বা
airtet বক্সে সংরক্ষণ করতে হবে ।প্রতিদিন প্রয়োজন মত খেতে হবে এবং ভালোভাবে টাইট
করে রেখে দিতে হবে।এতে অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকবে। প্রিয় বন্ধুরা আশা করি
আপনারা বুঝতে পেরেছেন।
শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার নিয়ম
প্রিয় বন্ধুরা এখন আমরা জানবো শিমুল মূলের পাউডার খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে। প্রতিদিন সকালে এক চামচ শিমুল মূলের পাউডার এক কাপ পরিমাণ পানিতে ভিজিয়ে ভালোভাবে মিক্স করে নিতে হবে এরপর সামান্য পরিমাণ দুধ ও মধু মিক্স করে খেয়ে নিতে হবে।এতে অনেক বেশি উপকার পাওয়া যাবে। যদি দুধ ও মধু না পাওয়া যায় তাহলে পানি দিয়ে মিক্স করেও খেতে পারেন।
অনেকে আবার জিজ্ঞেস করেন কতটুকু করে শিমুল মূল খাওয়া যাবে। দেহের ওজনের উপর নির্ভর করে শিমুল মূল খাওয়া উচিত। প্রতিদিনের ৪০০ মিলিগ্রাম শিমুল মুল খাওয়া যেতে পারে। তবে যদি কোন ব্যক্তির ওজন ৬০ কেজি পুকুরে হয় তাহলে তাকে ২৪ থেকে ৩০ গ্রাম পর্যন্ত শিমুল মূল দৈনিক খেতে পারবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
শেষ কথাঃ শিমুল মূল এর গুনাগুন ও শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে
শিমুল মূল এর গুনাগুন ও শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে আলোচনা করা হয়েছে। আপনারা যদি শিমুল মূল এর গুনাগুন ও শিমুল মূল খাওয়ার উপকারিতা সম্পর্কে জানতে চান অবশ্যই আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ভালোভাবে পড়ুন। আশা করি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে লাগবে। যদি আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। সকলে ভাল থাকবেন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি-আল্লাহ হাফেজ!